ওয়ারেন, ১৭ এপ্রিল : নানা আয়োজনে উৎসব আনন্দে গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) ওয়ারেন সিটির শিব মন্দিরে বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ পালিত হয়েছে। উৎসবকে ঘিরে ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি।
ওইদিন বিকালে মন্দিরের বাইরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষবরণ উৎসব। এ সময় সবার মুখে উচ্চারিত হয় কবি গুরুর চিরচেনা সেই সুমধুর গান ‘এসো হে বৈশাখ’। বৈশাখী সাজে বিভিন্ন রং-বেরংয়ের ফেস্টুন, ব্যানারসহ ঢাক ঢোল নিয়ে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা অংশ নেন তারা। মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে মন্দিরের হল রুমে কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক ও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট চিকিৎসক ও দার্শনিক ড. দেবাশীষ মৃধা প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন চন্দনা ব্যানার্জী ও মানবী মৃধা। নটরাজ সঙ্গীতায়নের শিল্পীরা সমবেত সঙ্গীত ও দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন। ভায়োলিন বাজিয়ে শুনান প্রজিতা বিশ্বাস, সামান্থা চৌধুরী ও প্রতীক দাশ। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শ্রদ্ধা হাওলাদার, প্রমিতা বিশ্বাস, রতিশ রায় চৌধুরী, অতসী চৌধুরী, কাবেরী দে, অঙ্কুর দেব মুগ্ধ, অপূর্ব চৌধুরী এবং নূর চিশতী। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন অদিতি, স্মরণীকা, প্রমিতা, অম্বিকাও আনিশকা। অপর দলীয় নৃত্যে অংশ নেন রিয়া, কৃষ্টি, সৃষ্টি, কুয়াশা, সুস্মা, ঋষিকা, অমিতা ও মৌ। এছাড়াও অরিত্রি, পুষ্পিতা, জেসিকা, আরিয়ানা, সোহানী দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে।
দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করেন মৃত্তিকা সরকার ও অর্পিতা সরকার, অদ্রিজা চক্রবর্তী ও সমৃদ্ধি বৈদ্য, সেঁজুতি দে ও শ্রাবন্তী দে, রাহুল দাশ ও কৃষ্ণা দাশ। লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেন রিংকু দাশ, পিংকু দাশ, রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন অদ্রিতা দাশও সৌরিক দাশ। মন্দিরের প্রধান প্রিস্ট পূর্নেন্দু চক্রবর্তী অপুর পরিচালনায় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ও পুথিপাঠে তার দল অংশ নেন।
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে নতুন আশায় বুক বেঁধে, চোখে নতুন স্বপ্ন নিয়ে বাঙালী বরণ করেছে নতুন বছরকে। চিরাচরিত ঐতিহ্য অনুযায়ী সকলে মিলে মেতে উঠেছে বৈশাখী উৎসবে। মিশিগান রাজ্যের বিভিন্ন সিটি থেকে মানুষ স্বপরিবারে ছুটে আসেন মন্দিরে, নববর্ষ উদযাপনে ভাগাভাগি করে নেন পহেলা বৈশাখের আনন্দ।
এদিকে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে হরেক রকম বাঙালি খাবারের আয়োজনও ছিল। যদিও এই খাবার বন্টনে বিলম্বের কারণে দর্শকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রোগ্রাম শেষে ছিল ডিনার। কিন্তু প্রোগ্রাম শুরুতে বিলম্বের কারণে এই ব্যতয় ঘটে। সেই সাথে স্ন্যাকসেরও ঘাটতি ছিল। এ ঘটনায় অনুতপ্ত মন্দির কর্তৃপক্ষ। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হবে না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan